হিন্দুদের দূর্গাপূজা এবং খ্রীষ্টানদের বড়দিন, বিধর্মীদের এসব উৎসবে মুসলিমরা কি করবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাদেরকে আমরা শুভেচ্ছা জানাবো কিনা? বা তাদের উৎসবে আমরা যেতে পারি কিনা?

অনেক সময় পরিচিত-বন্ধু-সহপাঠী-সহকর্মী কিংবা ক্লায়েন্ট, বিধর্মী হয়েও তাদের উৎসবে আমাদের (মুসলিমদেরকে) শুভেচ্ছা জানিয়ে বসে, আমরা অজ্ঞানতা বশত হয়তো তাদেরকে পাল্টা শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে থাকি। অন্যদিকে বিভিন্ন ধর্মপ্রাণ মানুষদের মন থেকে ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ দূর করার প্রচেষ্টা হিসেবেও একে অন্যের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াকে উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী একটি গোষ্ঠী। যা আসলে মানুষকে ধর্মবিমুখ বানানোর পায়তারা।

আসুন খুঁজে দেখি, বিধর্মীদের উৎসব-আয়োজনে আমাদের মুসলিমদের করণীয় এবং বর্জনীয়গুলো।

ইসলামের দৃষ্টিতে খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্ম

প্রথমেই সংক্ষেপে দেখে নেয়া যাক ইসলামের দৃষ্টিতে খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মে প্রধান কিছু সমস্যা।

খ্রিষ্টান ধর্ম

তারা ঈসা আ: এর উপর নাযিল হওয়া গ্রন্থকে কেন্দ্র করে চলতে আগ্রহী। যেটকে বলা হয় "বাইবেল"। আর আর সেই গ্রন্থের বিকৃত ব্যাখা (তাদের মন মতো ব্যাখ্যা) নিয়ে থাকতে তারা আগ্রহী। যেমন: শেষ নবী সম্পর্কে সেই গ্রন্থে উল্লেখ থাকলেও হযরত মুহম্মদ (স.) কে নবী হিসেবে স্বীকার করে না তারা। ঈসা আলাইহিস সালাম-কে আল্লাহ্‌র পুত্র বলে গণ্য করে (নাউযুবিল্লাহ্‌)। ঈসা আলাইহিস সালাম-কে নবী হিসেবে গণ্য না করে, নবীর চাইতে বেশী কিছু, তথা ঈশ্বরের তিন অংশের মধ্যেকার এক অংশ - এরকম গণ্য করে (নাউযুবিল্লাহ্‌), যা কিনা শির্ক।

হিন্দু ধর্ম-

এ ধর্মে দেব-দেবীর কল্পিত মূতির্কে পূজা করা হয়। যা হলো সরাসরি শির্ক।

তাহলে--

দেখা যাচ্ছে, খৃষ্টান ধর্মের মূলে রয়েছে শির্ক, আবার হিন্দুধর্মের মূলেও রয়েছে শির্ক। তাহলে এই দু'টি ধর্মের যে কোনো ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান উৎসব যাই আয়োজন করা হোক, সেটা শির্ক মুক্ত হবে এমনটা আশা করা যায় না।

একটি উৎসব যখনই "ধর্মীয় উৎসব", কখন সেটিকে আর নিছক আনন্দ উৎসব বলে গণ্য করার সুযোগ থাকে না। সেটি অবশ্যই ধর্মীয় ইবাদত কেন্দ্রীক অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে যে কোনোভাবে অংশ নেয়া সেই ধর্মীয় ইবাদতে অংশ নেয়া হিসেবেই গন্য হবে, নয় কি? বিধর্মীদের এরকম যে কোনো ধর্মীয় উৎসবে উপস্থিত হওয়া মানে হলো তাদের ইবাদতে অংশ নেয়া। সেই উৎসব উপলক্ষে কাওকে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, সেই অনুষ্ঠানকে সম্মতি দেয়া বা স্বীকার করে নেয়া।

তাই আপাত এইটুকু আলোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, শির্কমুক্ত থাকতে হলে আমাদের উচিত হবে, অন্য ধর্মগুলোর যে কোনো ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে অংশ না নেয়া, এবং তাদের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা আদান-প্রদান না করা। কেননা (এক) সেই অনুষ্ঠানের মধ্যে শির্ক থাকার সম্ভাবনা থাকে (দুই) সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রতি স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে সেই ধর্মের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি সম্মতি বা স্বীকৃতি জানানো হয়ে যায়।

 

এবার আলাদা আলাদাভাবে উৎসব দুটিকে বিশ্লেষন করা যাক--

বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে:

বড়দিন বা ক্রিসমাস কি? - এই দিনটি খৃষ্টানদের কাছে বিশেষ একটি দিন, যেদিন তাদের কথিত যিশুখৃস্ট (আমাদের নবী ঈসা আলাইহিস সালাম) জন্মগ্রহণ করেন। যদিও আসলে এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণে করেন কিনা এই প্রশ্নে ইসলামী স্কলাররা ভিন্ন মত পোষণ থাকেন, তবে সেটি ভিন্ন প্রসংগ। যাই হোক, খৃষ্টানরা এই দিনটিকে একজন মানুষের বা একজন নবীর জন্মদিন হিসেবে পালন করছে না বরং এ দিনটি পালনের কারণ হিসেবে তাদের ধর্মীয় গুরুত্বটুকু হলো দিনটি আল্লাহ্‌র পুত্র যিশু খৃষ্টের জন্মদিন (নাউজুবিল্লাহ্‌)। তাই এ দিনকে কেন্দ্র করে তাদের উৎসব-অনুষ্ঠান-আয়োজন-কার্যক্রমকে কোনোভাবে সমর্থন করার অর্থই হলো তাদের এই বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দেয়া - যেটা কোনোভাবেই উচিত নয়।

তাদের কথিত যিশু খৃস্ট তথা আমাদের নবী ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তাদের দাবী বা বিশ্বাস সমূহ ভুল, মিথ্যা এবং শিরক। এ বিষয়ে আল-কুরআনে বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন: [সূরা আল মায়েদা: ১৭], [সূরা মারইয়াম: ৮৮-৯৩] ইত্যাদি।

আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি এবং আল-কুরআন থেকে স্পষ্টভাবে জানতে পারি যে, ঈসা আলাহিস সালাম হলেন - আল্লাহ্‌র গোলাম, একজন মানুষ, যিনি নবী হিসেবে আল্লাহ্‌ তায়ালা কর্তৃক মনোনীত। ঈসা আলাহিস সালাম একজন নবী, আল্লাহ্‌র পুত্র (নাউজুবিল্লাহ্‌) নন। আর আল্লাহ্‌ তায়ালা এই পুত্র গ্রহণে বিষয়টিকে খুবই ঘৃণার চোখে দেখেন, তিনি খুবই রাগান্বিত হন। আর তা বোঝা যায় আল-কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে। যেমন, আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন:

"...যারা বলে যে, আল্লাহর সন্তান রয়েছে। এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও নেই। কত কঠিন তাদের মুখের কথা। ..." [১৮ সূরা কাহফ ৪-৬]

আল্লাহ্‌ তায়ালা আরো বলেন,

তারা (খ্রীস্টানরা) বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ। এটা শুনে নভোমন্ডল ফেটে পড়তো, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হয়ে যেতো এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হতো (যদি তাদের অনুভুতি থাকতো)। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান সাব্যস্ত করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়। নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না।” [সূরা মারইয়ামঃ ৮৮-৯৩]

তাহলে, যে কথাটি আল্লাহ্‌ কাছে এতো অপছন্দনীয় সেই কথার সাথে সম্মতি জানানো কি ভালো হবে আমাদের জন্য। অথচ " Merry Christmas" বলার মাধ্যমে বা যে কোনো ভাষায় এ আয়োজন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে তাদের উক্ত দাবীকে সম্মতি জানানো হয়ে যাচ্ছে - যে দাবী কিনা মিথ্যা, আল্লাহ্‌র অপছন্দনীয়, হারাম এবং শিরক।

দূর্গাপূজা:

আমরা জানি, মূর্তিপূজা হচ্ছে আল্লাহর সাথে শির্ক করা। আর শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় অন্যায়, সবচেয়ে বড় অপরাধ। এই শির্ককে কোনো না কোনোভাবে এতটুকুও সমর্থন করা যায় কি?

আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়।" (৩১ সুরা লুকমান: ১৩)

"নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপনকারীকে ক্ষমা করবেন না এবং তদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এবং যে কেহ আল্লাহর অংশী স্থির করে সে মহাপাপে আবদ্ধ হল।" (৪ সূরা নিসাঃ ৪৮)

এবং বলেছিলঃ তোমরা কখনও পরিত্যাগ করনা তোমাদের দেব-দেবীকে; পরিত্যাগ করনা ওয়াদ, সুওয়া, আগুছ, আউক ও নাসরকে। তারা অনেককে বিভ্রান্ত করছে; সুতরাং যালিমদের বিভ্রান্তি ব্যতীত আর কিছুই বৃদ্ধি করেনা। তাদের অপরাধের জন্য তাদেরকে নিমজ্জিত করা হয়েছিল এবং পরে তাদেরকে দাখিল করা হয়েছিল আগুনে, অতঃপর তারা কেহকেও আল্লাহর মুকাবিলায় পায়নি সাহায্যকারী। [৭১ সূরা নূহ: ২৩-২৫]

সূরা নূহ এর ২৩ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়ে থাকে যে, মিথ্যা উপাস্যের উপাসনার মতোই তাদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করাও কাফেরদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত।

তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, (ক) শির্ক করা মহা অন্যায় (খ) মূর্তি বা মূর্তিপূজার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করাও কাফেরদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত। তাহলে কোন সাহসে আমরা মূর্তিপূজার অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করবো, কিংবা তাদের অনুষ্ঠান-উৎসবে শুভেচ্ছা জানাবো?

(৪) হালকা করে দেখা:

অনেকে হয়তো বলবেন, আমরা তো পুজা করছি না, শুভেচ্ছা জানাচ্ছি মাত্র। ভেবে দেখুন:

শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, এ কথাই বলা যে-- (ক) সেই অনুষ্ঠানটি বা উৎসব আয়োজনটির মাধ্যমে তাদের কল্যাণ হোক। কিংবা সেই আয়োজনটি সফল হোক। -- অথচ আয়োজনটিই হচ্ছে শির্ককে কেন্দ্র করে। তাহলে, শির্ক ভিত্তিক কর্মকাণ্ডের কল্যান কামনা, কিংবা সেই কর্মকাণ্ডের মাধ্য দিয়ে কল্যাণ কামনা কিভাবে একজন মুসলিম করতে পারে?

(৫) বিধর্মীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক:

বিধর্মীদের সাথে ভালো আচরণ করা তো আমাদের কর্তব্য। ভালো আচরণ করতে হবে তার মানে এই নয় যে, ধর্ম নিয়ে মাখামাখি করতে হবে।

(ক) যেমন, আমরা যদি কোনো ধর্মপ্রাণ হিন্দুকে গরুর গোস্ত অফার করি সেটা তার কাছে খারাপ লাগা স্বাভাবিক। আমরা শুকরের গোস্ত খাই না, ঘৃণা করি। কেও যদি আমাদেরকে সেটা অফার করে, আমাদের খারাপ লাগবে। যেসব অন্য ধর্মবলম্বী মানুষ গরুকে দেবতা বলে বিশ্বাস করে, তারা নিশ্চয় আমাদের ঈদুল আযহার সময় ঈদ-মুবারক বলে শুভেচ্ছা জানাবে না, সেটাই স্বাভাবিক। আর যদি তা জানায়ও, তারপরেও সেটাকে অনুসরণ করা আমাদের জন্য হবে দায়ীত্বজ্ঞানহীন কাজ। বরং অন্য ধর্মবলম্বিরা যেটা বিশ্বাস করে সেটা তারা করুক, আমরা যেটা বিশ্বাস করি সেটা আমরা বিশ্বাস করবো। আমাদের বিশ্বাসের সাথে আমরা দৃঢ় থাকবো।

(খ) যেখানে প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হলো অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে সত্য ধর্ম ইসলাম পৌঁছে দেয়া, সত্যকে সুন্দরভাবে তাদের কাছে উপস্থাপন করা। সেখানে উল্টা আমরা কিভাবে তাদের মিথ্যা বিশ্বাসকে সম্মতি জানাতে পারি!

(গ) "ধর্ম যার যার - উৎসব সবার" এরকম নানা যুক্তি আজকাল উপস্থাপন করা হচ্ছে, নাস্তিক এবং ইসলাম বিরোধীদের চক্রান্তে। এই যুক্তিগুলো শোনামাত্র আমাদের কাছে হাস্যকর প্রতিয়মমান হতো - যদি আমাদের কিছুটা ইসলামের জ্ঞান থাকতো। বর্তমান সময়ে আমরা যারা মুসলিম পরিচয় দিই আমাদের বেশীরভাগেরই ইসলামী জ্ঞান নগন্য। তাই ইসলামী জ্ঞান অর্জন আমাদের জন্য জরুরী। আমাদের যার যত কম কিংবা বেশী জ্ঞানই থাকুক, সবার জন্য প্রয়োজন ইসলামকে জানার ধারা অব্যহত রাখা, আর সেজন্য অন্যতম কাজ হলো কুরআন পড়া ও বোঝার প্রক্রিয়া অব্যবহত রাখা।

(ঘ) আমরা আগেই দেখেছি, খ্রিষ্টান ধর্ম এবং হিন্দু ধর্ম দুটোতেই শির্ক রয়েছে। যারা শির্ক করে তারা কাফের। আমরা যাদেরকে কাফের বলে স্পশ্টবাবে জানি তাদেরকে কিভাবে অনুসরণ করতে পারি, তাদের ইবাদতে, ধঘর্মীয় অনুষ্টান-উৎসবে কিভাবে শুভেচ্ছা জানাতে পারি, অথচ আল।রাহ্‌ তায়ালা কুরআনে বলেছেন--

‘‘বলোঃ আমি কি সেসব লোকদের কথা জানিয়ে দেব? যাদের পরিণতি আল্লাহর কাছে এর চেয়ে খারাপ। তারা এমন লোক যাদেরকে আল্লাহ লানত করেছেন এবং যাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হয়েছে। যাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে তিনি বানর ও শুকর বানিয়ে দিয়েছেন। তারা তাগুতের পূজা করেছে। তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ থেকেও অনেক দূরে। (সূরা মায়েদাঃ ৬০)

‘‘... বল, তাহলে আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও খারাপ কিছুর সংবাদ দেব? তা হল আগুন। আল্লাহ কাফিরদেরকে এর ওয়া‘দা দিয়েছেন। আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল’’। [২২ সূরা হজ্জের ৭২]

(ঙ) বিধর্মীদের ধর্মীয় উৎসবে শুভেচ্ছা জানানোতে, এমন একটা কাজে আমরা শুভেচ্চা জানাচ্ছি যে কাজটি শির্কী কাজ বলে আমরা জানি। আমরা উপেক্ষা করছি আল্লাহ্‌র নির্দেশনা ও আল্লাহ্‌র রসূলের নির্দশনা।

“আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারী উক্ত নির্দেশের ভিন্নতা করার কোন অধিকার রাখে না। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করে সে স্পষ্টতই সত্য পথ হতে দুরে সরে পড়ল।” (৩৩ সুরা আহযাবঃ ৩৬)

আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের আরো সাবধান করেছেন---

আর যালিমদের প্রতি ঝুকে পড়না, অন্যথায় তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে, আর আল্লাহ ছাড়া তোমরা কোন সাহায্যকারী পাবেনা, অতঃপর তোমাদেরকে কোন সাহায্যও করা হবেনা। (১১ সূরা হুদ, আয়াত: ১১৩)

বিধর্মীদের সাথে সাধারণ চলাচল করা যায়। কিন্তু বন্ধুত্ব স্থাপন করা ঠিক নয়--

“মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে, তা অস্বীকার করছে। তারা রসূলকে ও তোমাদেরকে বহিস্কার করে এই অপরাধে যে, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস রাখ। যদি তোমরা আমার সন্তুষ্টিলাভের জন্যে এবং আমার পথে জেহাদ করার জন্যে বের হয়ে থাক, তবে কেন তাদের প্রতি গোপনে বন্ধুত্বের পয়গাম প্রেরণ করছ? তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর, ত আমি খুব জানি। তোমাদের মধ্যে যে এটা করে, সে সরলপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।” (৬০ সূরা আল-মুমতাহিনা, আয়াত: ১)

দৈনন্দিন কাজ-কর্মে বিধর্মীদের সাথে আমাদের চলতে হয়। তাই আমাদের জানা দরকার, তাদের সাথে আমাদের কতটুকু ঘনিষ্ঠতা থাকা উচিত, কতটা দূরত্ব। সেটা বিস্তারিততভাবে জানতে-বুঝতে হলো আমাদের উচিত নবী জীবনী (সীরাত গ্রন্থ) পড়া, প্রয়োজনে সাহাবীদের জীবনীও পড়ে দেখা।

(৬) তারা শুভেচ্ছা জানালে আমাদের উত্তর কি হবে?:

অন্য ধর্মাবলম্বি কেও যদি আমাদের শুভেচ্ছা জানায়, আমাদের উচিত নিরব থাকা, অথবা আমরা বলতে পারি "আল্লাহ্‌ তোমাকে হেদায়েত দান করুন"।

(৭) এই ক্ষেত্রে উদারত নয়

আমাদের ধর্মকে আমরা মানছি, সাথে সাথে তাদের ধর্মের সাথেও তাল মেলাবো, এভাবে ইসলাম পালন হয় না। এতটা হালকা করে দেখার আসলে সুযোগ নেই।

হ্যাঁ, ইসলাম মধ্যম পন্থার কথা বলে, ইসলাম উদারতার কথা বলে। তবে, মধ্যম পন্থা এখানে নয়, উদারতা এখানে নয়। সূরা কাফিরুনে সেটা পরিস্কার:

সূরা কাফিরুন