আজকের দিনে মুসলিম সমাজে প্রচলিত বিবাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় দেখা যায় - বিভিন্ন কুসংস্কার, অবৈধ কার্যকলাপ, বিধর্মীদের অনুকরণ এবং অশালীনতার ছড়াছড়ি। অনেকেই আবার এমনও চিন্তা করি যে, সাধারণ অবস্থায় যেগুলো নিষিদ্ধ, বিবাহ অনুষ্ঠানে সেগুলো বৈধ - এটি একটি চরম ভুল বা ডাহা মিথ্যা এবং শয়তানী যুক্তি।

কোনো আলেম উল্লেখ করেন, "বিবাহ হলো একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান" আবার কেও সরাসরি উল্লেখ করেন "এটি একটি ইবাদত"।

অথচ বিবাহের সেই আয়োজনে, সঠিকভাবে ইসলামী নিয়ম-কানুন মানা হয় না অনেক ক্ষেত্রে। বিবাহ পড়ানোর সময়টুকু বাদে নানা রকম আনুষ্ঠানিকতা আয়োজন করা হয়, যেগুলো থাকে অনিসলামিক কার্যক্রমে ভরপুর। আমরা কেও এগুলোতে অংশগ্রহণ করি আবার কেও এগুলোতে উৎসাহ দিয়ে থাকি, আবার কেও চুপ থেকে উদাসীন থেকে এগুলোতে অনুমোদন দিয়ে থাকি। যার ফলে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় গুনাহ সংগ্রহের উৎসবে।

বিবাহ বা নিকাহ নামক কার্যক্রমটি দিয়ে পাত্র-পাত্রীর জন্য একটি নতুন জীবনের শুরু হয়। সেই শুরুটাই করা হয় ভুলের মধ্য দিয়ে, অশ্লীলতা-অশালীনতা-কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে। এটিকে সুস্থ ও ইসলামসম্মতভাবে সম্পন্ন করা বর-কনের দায়িত্ব, কেননা এটা তাদের ভবিষ্যত জীবনটির সুত্রপাতের ক্ষণ। বর-কনের দায়িত্বের সাথে সাথে দায়িত্ব তাদের অভিভাবকদের। জীবনকে বরকতময় করতে ইসলামসম্মত বিয়ের আয়োজনে পাত্র-পাত্রী এবং অভিভাবক সহ আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া দরকার। বর্তমান সময়ে বেশী বয়সে বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে, আর সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠান-আয়োজনে বরের কর্তৃত্বও থাকে বেশ, অনুরূপভাবে থাকে কনেরও। অন্যান্য ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরই কর্তৃত্ব থাকে। মনে রাখতে হবে - যার কর্তৃত্ব যতটা, তার দায়িত্বও ততটা। আর অবশ্যই হাশরের ময়দানে আমাদেরকে আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।

ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
‘‘প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের দায়িত্বশীলা, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল, সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’’
[হাদীস]

১. বিবাহ উপলক্ষে প্রচলিত বিভিন্ন ধাপ ও অনুষ্ঠানসমূহ:

ক. পাত্রী দেখা (পাত্রী পছন্দ করা):

বিয়ের আয়োজনের প্রস্তুতিতে প্রথম পর্যায়েই আসে পাত্রী বা কনে দেখার বিষয়টি। বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীকে দেখবে এটা ইসলাম সম্মত, ইসলাম নির্দেশিত। এই প্রথম পর্যায়েই পর্দার খেলাফ হতে দেখা যায়। কোনো বর তার বন্ধুকে নিয়ে যায়, কেও দুলাভাইকে, কেও মামা-চাচাকে নিয়ে যায়, কারো পিতা যায় সাথে। বরপক্ষের পুরুষ মানুষদের মধ্যে একমাত্র বরই কনেকে দেখতে পারবে। বরের অন্য কোনো পুরুষ আত্মীয়-বন্ধু তো নয়ই, এমনকি বরের পিতাও সেই কনেকে দেখতে পারেন না। এই কাজে বর তার বোনকে নিয়ে যেতে পারে।

খ. গায়েহলুদ:

খুব সম্ভব বিধর্মীদের সংস্কৃতি থেকে আসা এই অনুষ্ঠানটি আজকের সমাজে অন্যতম একটি বিবাহ কেন্দ্রীক আয়োজন। যা বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবেই আয়োজন করা হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানের সমস্যাগুলো হলো:

এভাবে দেখা যাচ্ছে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি পুরোটাই অবৈধ, হারাম, অশ্লীলতা, অশালীনতায় ভরপুর থাকে। অথচ, এগুলো মেনে নিয়ে আমরা সামাজিক জাহেলিয়াত ও কুসস্কারকে লালন করছি।

গ. কনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান:

বিয়ের দিন, বর সাথে করে অনেক লোক-জন নিয়ে যায় কনের বাড়িতে। যাকে বলে বরযাত্রী। এখানে বিয়ে পড়ানো হয় এবং সাথে ভোজের অনুষ্ঠান চলে। সেই সাথে থাকে বেপর্দা, ছবি উঠানো, এছাড়াও এলাকা অনুযায়ী নানা রকম ফরমালিটি।

প্রচলিত এই পুরো অনুষ্ঠান অনিসলামিক।

কনের বাড়িতে তথা মেয়ের অভিভাবকের বাড়িতে বরযাত্রী যেয়ে যে খানা খায়, এই খানা জায়েজের খানা নয়।

নিকাহ হবে মসজিদে, কনের বাড়িতে নয়।

ঘ. ওলিমা (বিয়ে উপলক্ষে ভোজ):

এই শব্দটি অর্থাৎ "ওলিমা" কথাটি হয়তো আমাদের অনেকেরই পরিচিত নয় অথবা এর অর্থ পরিস্কার নয়। এর পরিবর্তে "শুভ বিবাহ" এবং "বৌ-ভাত" শব্দগুলো পরিচিত।

মুসলমানের বিয়ের শব্দ অলিমা।

সমাজে প্রচলিত "বিয়ে", "শুভ বিবাহ" এবং "বৌ-ভাত" শব্দগুলো ইসলামী নয় আর এর সমাজে প্রচলিত আয়োজনও ইসলামসম্মত নয়।

"ওলিমা" ইসলামের পরিভাষা এবং ইবাদত। সেই ইসলামী "ওলিমা"র সীমার মধ্যে না থেকে এটার পরিবর্তে (বিয়েকে কেন্দ্র করে) যা কিছু আয়োজন হয় সেগুলো বেহায়া, অশ্লিলতা, অলালীনতার সমন্বয় বা কুসংস্কার ও পাপাচারের একটা সমষ্টি মাত্র।

ওলিমা হবে বর পক্ষের আয়োজন: বিয়ের আনন্দে পাত্র বা পাত্র পক্ষ তাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মী-স্বজনকে খাওয়াবে। এখানে পাত্রীর উপস্থিতির কোনো প্রশ্ন উঠে না - (ড. আব্দুল্লাহ্‌ জাহাঙ্গীর)।

- এই (পাত্রের পক্ষ থেকে) খাওয়ানোটাকে অনেকে ওয়াজিব বলেছ্ন।

২. বিয়েকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনাচার (গুনাহের আয়োজন):

ক. ভাবী-দেবর সম্পর্ক এবং শালী-দুলাভাই এর মধ্যে সম্পর্ক:

বিবাহের অনুষ্ঠানে এবং অনুষ্ঠানের বাইরেও এই সম্পর্কগুলোকে অভিভাবকরা অনুমোদন করেন। তাদের মধ্যে আলাপ, হাসি-ঠাট্টাকে অনুমোদন এবং উৎসাহিত করা, ইত্যাদি করে থাকেন অনেক অভিভাবক। এমনকি তারাও আনন্দ পান। এটাও অনুমোদনযোগ্য নয়। এই সম্পর্কগুলোতে পর্দা ও সতর্কতার বিধান রয়েছে ইসলামে। আর অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছাড় দেয়া সেটাও করা যাবে না।

খ. গান-বাজনা:

বাদ্য বাজনা হারাম। বিবাহ অনুষ্ঠান উপলক্ষেও হারাম। অনেকেই ভাবেন বিবাহ অনুষ্ঠানে একটু গান-বাজনা না হলে কেমন হয় - এভাবে ছাড় দেয়োর কোনো সুযোগ নেই। হাদীসে বিবাহ উপলক্ষে আনন্দ করার বিধান আছে। তবে সেই আনন্দ আয়োজন হতে হবে পর্দা রক্ষা করে এবং বাদ্য-বাজনা ছাড়া। দফ নামে একটি বাদ্যযন্ত্র আছে, একদিক খোলা ঢোলের মতো, সেটা ব্যবহার করার অনুমতি দেয় ইসলাম।

গ. বর কর্তৃক অর্থ-সম্পদ গ্রহণ:

বিয়ের পরে যৌতুক দাবী করা - হারাম।

বিয়ের পরে আকারে ইংগিতে কিছু চাওয়া, বা প্রত্যাশা করা - হারাম।

বিয়ের আগে দাবী করে যৌতুক নেয়া - হারাম।

বিয়ের আগে দাবী না করা কিন্তু প্রত্যাশা করা - হারাম।

গ. দেন-মোহর:

মোহর হলো বিয়ের উপহার। দেন মোহর দেয়া বরের কর্তব্য। এটা বাধ্যতামূলত।

মোহরের পরিমাণ: এর কোনো সীমারেকা নেই। তবে আমাদের উচিত এমন একটি পরিমাণ নির্ধারণ করা যা দেয়া বরের আর্থিক অবস্থার ভেতরে, এবং যেটা বরের সামর্থের সাথে যুক্তিযুক্ত।

মোহর বাকী রেখে দেয়া অযৌক্তিক। এবং কৌশল করে মাফ চেয়ে নেও অযৌক্তিক।

ঘ. "কণ্যা-দায়":

"কণ্যা-দায়" বলে একটি "টার্ম" (পরিভাষা) রয়েছে বাংলায়। সম্ভবত শব্দটি বিধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে এসেছে। যেখান থকেই আসুক। কথাটি যেন নির্দেশ করে যে, কন্যার জন্ম হয়েছে তোমার ঘরে, এখন দায়মুক্ত হতে তোমাকে অনেক জরিমানা দিতে হবে। এই দায় থেকে মুক্তি পেতে কনের অভিভাবককে বেশ কিছু খেসারত (ক্ষতিপূরণ) দিতে হয়, যেগুলো ইসলাম নির্দেশিত বা ইসলামসম্মত নয়। (ক) বরকে বা বরপক্ষকে যৌতুক দেয়া, (খ) বরের জন্য পোষাক দেয়া (গ) বর পক্ষকে কে আপ্যায়ন করা (ঘ) সমাজের লোকদের খাওয়ানো, এছাড়াও আরো কিছু খরচ বা আনুষ্ঠানিকতা স্থানভেদে দেখা যায়। সমাজে প্রচলিত রীতি হিসেবে কনের অভিভাবককে এইসব দায়িত্বগুলো পালন এবং এর খরচগুলো বাধ্য হয়ে বহন করতে হয়। কনের অভিভাবকের প্রতি এতগুলো দায়িত্ব আমাদের সমাজে লালন করে আমরা কনের অভিভাবকদের উপর জুলুম করছি না কি?

৩. ইসলাম সম্মত বিয়ের অনুষ্ঠান সমূহ:

পাত্রী দেখবে কেবলমাত্র বর, তার সাথে অন্য কোনো পুরুষ মানুষ থাকবে না, বরের পিতাও নয়। বর তার বোনকে সাথে রাখতে পারে।

বিয়ে ঠিক হবার পর অনুষ্ঠান হবে মোট ২টি।

প্রথমটি - নিকাহ - মসজিদে
দ্বিতীয়টি (তথা শেষটি) - ওয়ালিমা - ছেলের বাড়িতে

ক. নিকাহ (বিয়ে পড়ানো):

নিকাহ হবে মসজিদে, কনের বাড়িতে নয়। সেখানে ছেলের পক্ষ থেকে কিছু খোরমা-খেজুর ছিটিয়ে দিবে।

কনে অবস্থান করবে তার বাড়িত, অর্থাৎ তার অভিভাবকের আবাসস্থলে। বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেকে হাজির হতে হবে এটা জরুরী নয়। বিশেষ করে বেপর্দা হাজির তো হবেই না, হারাম।

মেয়ের কাছে ইজিন-এর জন যাবে। অর্থাৎ অনুমতির জন্য যাবে। কোনো বেগানা যাবে না। যাবে মেয়ের পিতা। প্রয়োজনে বড় ভাই যেতে পারে, চাচা-মামা যেতে পারে। যে ইজিন-এর জন্য যাবে সে হলো উকিল। যেহেতু মেয়ে সাবালিকা, তার দুইজন স্বাক্ষি লাগবে। তাহলে মোট যবে তিন জন। গিয়ে বলবে-

"বাবারে অমুক গ্রামের অমুকের ছেলে অমুকের কাছে তোমাকে এত টাকা মোহরের বিনিময়ে নিকাহ দিতেছি, এতে তুমি কি রাজী? রাজী থাকলে বল "কবুল"। মেয়ের সম্মতি পেলে এটা উকিল শুনলো, স্বাক্ষী দুজন শুনলো, পর্যবেক্ষণ করলো। এই তিনজন মানুষ নিকাহের অনুষ্ঠানে ফিরে যাবে।

যিনি আকদ পড়াবেন তিনি এই কাজটা করার আগে খুতবা পাঠ করবেন। বিয়ের খুতবাটা দাঁড়িয়ে পাঠ করা সুন্নত।

এখন ইমাম সাহেব আকদ পড়ালে তিনি নিজে মুখে বলবেন না, বরং ঐ উকিলকে দিয়ে বলাবে-

"আমি আমার মুয়াক্কেলা অমুক গ্রামের অমুকের মেয়ে অমুককে এত টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে উপস্থিত স্বাক্ষীগণের সম্মুক্ষে আপনার নিকট নিকাহ্‌ দিলাম।" উকিল যদি নিজে নিজে বলতে না পারে, তাহলে ইমাম সাহেব তাকে দিয়ে বলাবেন।

"আপনি কি কবুল করলেন?"এ প্রশ্ন করার পর বরকে সম্মতি দিতে হবে। বর নিজে বলবে অথবা যিনি আকদ পড়াবেন তিনি বরের মুখে মুখে এটি পড়াবেন। যখন বর বলবে আমি কবুল করলাম। এসময় যিনি আকদ পড়াবেন তিনি স্বাক্ষীদয়কে জিজ্ঞেস করবেন আপনারা কি শুনেছেন? যদি স্বাক্ষীদ্বয় বলে, হাঁ শুনেছি, তাহলে নিকাহ হয়ে গেলো।

এই স্বাক্ষীগনের জন্য শর্ত হলো। ইজাব এবং কবুল - মেয়ে যে রাজি আছে সেটা আর ছেলে যে বকুল করছে সেটা, এই দুইজন স্বাক্ষীকে অবশ্যই পাত্র এবং পাত্রী দুজনের সম্মতিই শুনতে হবে। যে কোনো একটা শুনলে বিয়ে হবে না।

খ. নিকাহের (বিয়ে পড়ানোর) পর:

বিয়ে হয়ে গেলো। এবার যার যেমন আপন আপন বাড়িতে চলে যাবে।

শুধুমাত্র বিয়ের পাত্র (বর) তার কোনো বন্ধু বা ভাইকে সাথে নিয়ে যেতে পারে শশ্বুর বাড়িতে। গিয়ে সেখান থেকে বউকে সাথে করে নিয়ে যাবেন। সেখানে নাস্তার ব্যবস্থা থাকলে খাবে নাহলে না।

পাত্র তার সদ্যবিবাহীতা স্ত্রীকে সাথে করে নিয়ে আসার পর তার বাড়িতে অলিমার অনুষ্ঠান হবে। যেটা আমাদের দেশে বৌভাত বলে পরিচিত। ইসলামী সংস্কৃতিতে এটা হলো অলিমা।

গ. ওয়ালিমা:

দ্বিতীয়টি (তথা শেষটি) - ওয়ালিমা -ছেলের বাড়িতে

৪. সংক্ষেপে:

খুব দু:খজনক যে, "মুসলিম হিসেবে আমাদের বিয়ে কিভাবে হওয়া উচিত" এটা আমরা জানিই না। আসুন জেনে নিই এবং অপসংস্কৃতিমুক্ত আয়েজন নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেষ্ট হই।

আসুন কিছু কি-পয়েন্ট আবারো দেখে নেই: